আমরা সকলেই স্মার্টফোন ব্যবহার করি । আমরা স্মার্টফোন কিনতে গেলে সবসময় ভালো মানের ফোন কিনতে চাই।বর্তমানে স্মার্টফোন জগতে জনপ্রিয় নাম আসুস স্মার্টফোন। আসুস – টেক কোম্পানি তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভালো মানের ফোন তৈরি করছে । প্রতিটি ফোনের ভাল ও খারাপ দিক রয়েছে। তাই আজকে জানাবো আসুস ফোনের বৈশিষ্ট্য, ভালো ও খারাপ দিক , সুবিধা অসুবিধা সহ সকল খুঁটিনাটি বিষয়

আসুসটেক ইনকর্পোরেটেড কোম্পানি ১৯৯০ সালের ২ এপ্রিল তাইওয়ানের তাইপে তে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে কম্পিউটার ও ল্যাপটপের সকল যন্ত্রাংশ তৈরি করে । প্রথম থেকেই আসুস মাদারবোর্ড , প্রসেসর , মনিটর গেমিং পণ্য , রাউটার ইত্যাদি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাজারজাত করে আসছে।
বর্তমানে আসুস স্মার্টফোন জগতে জগতে প্রবেশ করেছে। আসুসের রয়েছে জনপ্রিয় গেমিং স্মার্টফোন ও পিসি । বিশ্বের জনপ্রিয় ফোনের তালিকায় স্থান পেয়েছে আসুস কোম্পানি।
আপনি যদি আসুসের স্মার্টফোন কিনতে চান এই পোষ্টটি আপনার অনেক উপকারে আসবে । কারণ আজকে আসুস কোম্পানীর স্মার্টফোনের ফোনের ভালো ও খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা করা হবে
আসুস এর যেসব স্মার্টফোন এখন পর্যন্ত বাজারে বিক্রি হয়েছে তাদের সেরা স্মার্টফোন হচ্ছে asus Zenfone ও asus ROG phone সিরিজ । ROG phone সিরিজ হচ্ছে মূলত গেমিং ফোন । আসুসের Rog phone সিরিজের সেরা স্মার্টফোন হচ্ছে Asus ROG phone 9 pro
আসুস ফোনের ভালো দিক
ফোনের ডিজাইন ও ডিসপ্লে কোয়ালিটি :
আসুসের সকল ফোনের ডিজাইন অত্যন্ত নজর করা ও মনমুগ্ধকর । বডি ফ্রেম প্লাস্টিক ও মেটাল হওয়ার কারণে ফোন গুলোর গঠন অনেকটা শক্তিশালী । ফোনের ডিসপ্লে হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ফুল এইচডি প্লাস [ full HD+ ] ও অ্যামোলেড [AMOLED] প্যানেল ডিসপ্লে । বড় সাইজের ডিসপ্লের পাশাপাশি ১২০ Hz থেকে ১৬৫ Hz রিফ্রেশ রেট থাকায় গেমিং ও মাল্টিটাস্কিংয়ে অনেক ভালো সুবিধা পাবেন । ফোনের ডিসপ্লে সুরক্ষায় কর্ণিং গরিলা গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে যাতে স্মার্টফোন পড়ে গেলে ডিসপ্লে ভেঙে না যায় । এছাড়া ডিসপ্লে তে ব্রাইটনেস বেশি থাকায় সূর্যের আলোতে স্পষ্ট স্কিন দেখতে কোনো সমস্যা হবে না । আমরা এক কথায় বলতে পারি আসুস ফোনের ডিসপ্লে কোয়ালিটি অসাধারণ।
হার্ডওয়্যার পারফর্ম্যান্স :
আসুস ফোনের অন্যতম ভালো দিক হচ্ছে তাদের প্রসেসর । । আসুস ফোনে উন্নত মানের প্রসেসর হয়েছে। যেহেতু আসুস কোম্পানী নিজেরাই প্রসেসর তৈরি করে তাই তারা অত্যন্ত শক্তিশালী প্রসেসর ব্যবহার করে। ফোনের চিপসেট হিসেবে রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন প্রসেসর [ snapdragon series ]। এছাড়া তাদের ফোনে বিশাল স্টোরেজ রয়েছে তাই ব্যাকগ্রাউন্ডে একসাথে অনেকগুলো অ্যাপস ব্যবহার করা যায় এবং সহজে হ্যাং করেনা ।
গেমিং পারফর্ম্যান্স :
আপনি যদি অনলাইন বা অফলাইন গেমিং করে থাকেন তাহলে আসুসের ROG phone সিরিজ আপনার জন্য বেস্ট অপশন। কারণ আসুসের ROG phone সিরিজ টি মূলত গেমিং এর জন্য তৈরি করা হয়েছে । আসুসের নিজস্ব প্রসেসর , বড় সাইজের ডিসপ্লে ও ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপের কারণে গেমিং করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা ভালো সুবিধা পাবে । আসুসের গেমিং সিরিজের ফোনগুলোতে পাবজি , ফ্রী ফায়ার , কল অফ ডিউটি গেমস গুলি সহজেই রান করা যায়। আসুসের ফোনে গেমিং করার ক্ষেত্রে অন্যরকম অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে যা অন্য সব সাধারণ স্মার্টফোনে নেই।
ব্যাটারি ব্যাকআপ সার্ভিস :
ব্যাটারি ব্যাকআপ এক কথায় অসাধারণ । কারণ আসুস ব্যাটারি হিসেবে ব্যবহার করছে নন রিমুভালভাবল লি – প্রো [ non removable Li – pro ] উন্নত মানের ব্যাটারি যা দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা যায় । আসুসের ফোনগুলোর ব্যাটারি ক্যাপাসিটি ৬০০০ mAh । যা বর্তমানে সর্বোচ্চ ব্যাটারি লাইফ নিশ্চয়তা দেয় । তাদের ব্যাটারি কার্যক্ষমতা বেশি হওয়ার কারণে স্মার্ট ফোনগুলো একবার ফুল চার্জ করলে দেড় থেকে দুই দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় । ফার্স্ট চার্জিং সিষ্টেমের কারণে ফোনগুলো কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ফুল চার্জ করা সম্ভব । কারণ ফোনের সাথে পাচ্ছেন টাইপ সি পোর্ট সহ ওয়্যারলেস চার্জার ।
আসুস ফোনের খারাপ দিক
ক্যামেরা কোয়ালিটি :
আসুসের কিছু কিছু স্মার্ট ফোনের ক্যামেরা কোয়ালিটি খারাপ হতে পারে। ক্যামেরা কোয়ালিটি খারাপ কথাটা শুনে অনেকেই হতাশ হতে পারেন কিন্তু আমরা সকলেই জানি গেমিং স্মার্টফোন গুলোর ক্যামেরা কোয়ালিটি অন্যান্য ফোনের ক্যামেরা কোয়ালিটি থেকে কিছুটা কম থাকে । এক্ষেত্রে আসুসের ফোনগুলো ব্যতিক্রম নয় তাদের গেমিং সিরিজের ফোন গুলোর ক্যামেরা পারফরমেন্স কম রয়েছে। কিন্তু গেমিং স্মার্টফোন বাদে অন্যান্য সব ফোনে হাই রেজুলেশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে ফলে পিকচার ও ভিডিও কোয়ালিটি মানসম্মত।
সফটওয়্যার আপডেট ইস্যু :
সময়মতো সফটওয়্যার আপডেট স্মার্টফোন গুলোর পারফরমেন্স বাড়াতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে আমরা নতুন সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকি ।
কিন্তু আসুসের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে স্লো সফটওয়্যার আপডেট । অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সফটওয়্যার আপডেট দ্রুত হয় কিন্তু আসুস ফোনে সফটওয়্যার আপডেট পেতে দীর্ঘ সময় লাগে , যার ফলে ব্যবহারকারীরা নতুন সুযোগ সুবিধা গুলো পায় না ।
অফিসিয়াল ফোনের সংকট :
বাংলাদেশে আসুসের হাতে গোনা কয়েকটি অফিসিয়াল শোরুম রয়েছে । সব জায়গায় অফিশিয়াল শোরুম না থাকায় ফোন ক্রয় করা কিছুটা কষ্টকর । আবার আন অফিসিয়ালি আসুস ফোন কিনতে পাওয়া যায় তবে দাম কম-বেশি হতে পারে । এছাড়া অনলাইন শপ গুলোর মাধ্যমে আপনি সহজেই স্মার্টফোনগুলো কিনতে পারবেন
অতিরিক্ত দাম :
আসুস একটি আন্তর্জাতিক মানের কোম্পানী । তাদের ফোন গুলোর দাম অনেকটা বেশি হয়ে থাকে । অন্যদিকে বাংলাদেশে অফিসিয়াল শোরুম কম থাকায় আসুসের ফোনগুলো কিনতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয় । কারণ অফিসিয়াল শোরুম না থাকায় বিক্রেতারা বেশি দামে ফোন বিক্রি করে ।
সার্ভিসিং সেন্টার সীমাবদ্ধতা :
যেকোনো স্মার্টফোন কেনার পর কোনো সমস্যা হলে সার্ভিসিং করার দরকার হয় । অন্যান্য স্মার্টফোনগুলোর সার্ভিসিং সেন্টার সবখানে পাওয়া গেলেও আসুসের সার্ভিসিং সেন্টার সব জায়গায় নেই । যার ফলে ফোনের কোন ত্রুটি বা সমস্যা দেখা দিলে সার্ভিস করানো কষ্টকর হবে ।
উপরে আসুস ফোনের বৈশিষ্ট্য , ভালো ও খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন আপনি যদি বাংলাদেশে asus ফোন কিনতে চান তাহলে ভালো খারাপ দিকগুলো বুঝে ফোন কেনা উচিত। আসুসের ফোনগুলো যথেষ্ট ভালো হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে তাদের অফিসিয়াল শোরুম সীমাবদ্ধতা ও স্বল্প সংখ্যক সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে । এতে করে ফোন কেনার পরবর্তী সময়ে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সমাধান করা অনেকটা কষ্টকর হবে । আপনি যদি এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন তাহলে আসুস স্মার্টফোন হতে পারে আপনার জন্য একটি বেস্ট স্মার্টফোন